কাঠমান্ডু ভ্যালি কাঠমান্ডু, পাটান এবং ভক্তপুর – এ তিনটি প্রাচীন শহর নিয়ে গঠিত। যেগুলো একসময় ১২ শতক থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত মল্ল রাজাদের দ্বারা শাসিত স্বাধীন রাজ্য ছিল। তিনটি শহরে মোট সাতটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে যা একসাথে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট (সংস্কৃতি) হিসাবে তালিকাভুক্ত। এই সাতটির মধ্যে রয়েছে কাঠমান্ডু, পাটন ও ভক্তপুরের দরবার স্কোয়ার, স্বয়ম্ভু ও বৌদ্ধনাথের বৌদ্ধ স্তূপ এবং পশুপতি ও চাঙ্গু নারায়ণের হিন্দু মন্দির। তাছাড়া এ ভ্যালিতে আরও শত শত অন্যান্য সূক্ষ্ম সৌধ, ভাস্কর্য, শৈল্পিক মন্দির এবং অসম্ভব সুন্দর স্থাপত্যে শিল্পের আবাসস্থল রয়েছে – যা নেপালের স্থাপত্যের সোনালী যুগের অনুস্মারক।
কাঠমান্ডু ভ্যালির উল্লেখযোগ্য শহরগুলোতে তাদের অলঙ্কৃত প্রাসাদ, চমৎকারভাবে কারুকাজ করা প্যাগোডা এবং স্তূপগুলি উপত্যকার আদি বাসিন্দা নেওয়ারদের শৈল্পিক প্রতিভার সাক্ষ্য দেয়। যাদের দক্ষতা মল্ল রাজাদের সময়কালে বিকশিত হয়েছিল। যা ১৮ শতকের চীনের শাসক মঙ্গোলরাও এর প্রশংসা করেছিলেন। কাঠমান্ডু উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো তুলে ধরা হলো:
কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার
কাঠমান্ডু দরবার স্কোয়ার, যা বসন্তপুর দরবার এবং হনুমান ধোকা নামেও পরিচিত। এটি কাঠমান্ডুর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত একটি পুরানো দরবার স্কোয়ার। যা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের (সংস্কৃতি) তালিকাভুক্ত একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। কাঠমান্ডু দরবার স্কোয়ারের জটিল কাঠের খোদাই এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস দর্শনার্থীদের সবসময় মুগ্ধ করে। তাছাড়া গাদ্দী বৈঠকের আশেপাশে হস্তশিল্পের বেশ কিছু দোকান রয়েছে, যেখানে আপনি বিভিন্ন আকর্ষণীয় ক্রয়যোগ্য হস্তশিল্প দেখতে পাবেন।
কাঠমান্ডু দরবার স্কোয়ারটি মূলত সাবেক কাঠমান্ডু রাজ্যের মল্ল ও শাহ রাজাদের প্রাসাদ ছিল। যা লিচ্ছবি আমলে নির্মিত হয়েছিল (খ্রিস্টীয় ৪র্থ থেকে ৮ম শতাব্দী), এবং রাজা প্রতাপ মল্ল ১৭শ শতাব্দীতে দরবার স্কয়ারটি উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত করেছিলেন। কয়েক শতাব্দীকাল ধরে নির্মিত “নেওয়ার” শিল্পীদের শিল্প কর্ম এই স্থাপত্যকর্মগুলোতে এখনো শোভা পাচ্ছে। পুরানো এই দরবার স্কোয়ারে বেশ কয়েকটি চতুর্ভুজাকৃতির প্রাসাদ, উঠোন এবং মন্দির রয়েছে। এটি “মন্দিরের যাদুঘর” নামেও পরিচিত কারণ এখানে ৫০টিরও বেশি মন্দির রয়েছে।
স্বয়ম্ভূনাথ
স্বয়ম্ভূনাথ হলো কাঠমান্ডু শহরের পশ্চিমে কাঠমান্ডু উপত্যকার একটি টিলার চূড়ায় অবস্থিত প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মীয় কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সটিতে একটি স্তূপ, বিভিন্ন মঠ এবং মন্দির রয়েছে, যেগুলোর কিছু তৈরি হয়েছিল লিচাভি যুগের সময়ে। সাম্প্রতিক সংযোজন হচ্ছে একটি তিব্বতি বিহার, জাদুঘর এবং গ্রন্থাগার। স্তূপে বুদ্ধের চোখ, ভ্রু ও নাকের ছবি আঁকা আছে।